বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী, ২০২৫
শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৪
রুম হিটার ব্যবহারের আগে যেসব বিষয় জানা জরুরি
শীতের সন্ধ্যায় হয়ে যাক ডিম মোমো
সোমবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
শীতে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি পূরণ করবে যেসব খাবার
কেমন হবে টিনএজ সন্তানের সঙ্গে মা-বাবার আচরণ
বয়ঃসন্ধিকালকে অভিভাবকত্বের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং পর্যায় বলা হয়। একসময়ের আড্ডাবাজ এবং স্নেহপূর্ণ শিশুটি হঠাৎ দূরের, খিটখিটে মেজাজের বা বিদ্রোহী বলে মনে হতে পারে। এর ফলে বাবা-মা বিভ্রান্ত বোধ করে এবং কীভাবে সংযোগ করা যায় তা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে যায়। কিশোর-কিশোরীদের জন্য এটি একটি বিশাল পরিবর্তনের সময় কারণ তারা তাদের ক্রমবর্ধমান স্বাধীনতা, সময়বয়সীদের সঙ্গে প্রতিযোগীতার চাপ, এবং মানসিক উত্থান-পতনে নিজেও দিশেহারা বোধ করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক টিনএজ সন্তানের সঙ্গে মা-বাবার আচরণ কেমন হবে-
১. বেশি শুনুন, কম কথা বলুন
কথোপকথনের আগে, চলাকালীন এবং পরে কথা বলার চেয়ে অনেক বেশি শুনুন। কিশোর-কিশোরীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ক্রমাগত উপদেশ বা নির্দেশ পেতে থাকে। আপনার নিজের শব্দ নিরীক্ষা করে এবং অপ্রয়োজনীয় বক্তৃতা সীমিত করে, তার স্বায়ত্তশাসনের প্রতি আস্থা ও সম্মান প্রকাশ করেন। এই সূক্ষ্ম পরিবর্তন তাকে মন খুলে কথা বলতে সাহায্য করবে।
২. ভাষাকে আক্ষরিক অর্থে গ্রহণ করবেন না
কিশোর-কিশোরীরা প্রায়ই নাটকীয় বা আঘাতমূলক ভাষা ব্যবহার করে, কিন্তু এক্ষেত্রে বাবা-মায়ের অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া করা উচিত নয়। ‘আমি তোমাকে ঘৃণা করি’ বা ‘আমি তোমাকে মেরে ফেলবো’ এর মতো বাক্যাংশগুলো সাধারণত প্রকৃত উদ্দেশ্যের পরিবর্তে হতাশার প্রকাশ করে। এগুলো আসলে প্রতিরক্ষা বাহিনীর দ্বারা ছোড়া তীর। এটাকে সিরিয়াসলি নেবেন না। তার আবেগ স্থির হতে দিন এবং ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্ব এড়িয়ে যান।
৩. সমর্থন
কৈশোর হলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময়, শখ থেকে বন্ধুত্ব পর্যন্ত সবকিছুরই নীরিক্ষা চলে এসময়ে। যদিও তার পছন্দগুলো চঞ্চল বা অসঙ্গত বলে মনে হতে পারে, তবে এই অন্বেষণটি পরিচয় গঠনের জন্য অপরিহার্য। লজিস্টিক সীমা নির্ধারণ করার সময় পিতামাতাদের এই উদ্যোগগুলোকে সমর্থন করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। বিনা বিচারে উৎসাহ তাদের আত্মবিশ্বাস ও স্বাধীনতা বাড়ায়।
৪. স্বাধীনতা এবং বাউন্ডারি স্পষ্ট করুন
কিশোর-কিশোরীরা স্বাধীনতা চায় কিন্তু নিয়ন্ত্রণেরও প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখা উচিত। টিনএজ সন্তানকে তার পোশাক বাছাই করতে দিন। তবে বয়সের আগেই ড্রাইভিং বা কোনোকিছুর অপব্যবহার করতে দেবেন না। এই পদ্ধতিটি পারস্পরিক শ্রদ্ধা গড়ে তোলে এবং তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
হুডি, জ্যাকেট নাকি ব্লেজার
একটা সময় ছিল, যখন শীত মানেই বড়রা পরতেন চাদর কিংবা সোয়েটার; আর তরুণেরা পরতেন জ্যাকেট। নারীরা পরতেন শাল আর কার্ডিগান। এটা ছিল শীতফ্যাশনের সাধারণ প্যাটার্ন। কোট, স্যুট যে পরা হতো না, তা নয়। কিন্তু সেসব ছিল সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। জ্যাকেটের ছিল নানা কেতা। বেশির ভাগ ছিল কাপড়ের দুই স্তরের মধ্যে ফোম দিয়ে তৈরি। ফুলহাতা সেসব জ্যাকেটের কোনো কোনোটা চেইন খুলে বানিয়ে ফেলা যেত হাফহাতা। আর সেগুলোর রং ছিল সাধারণত কালো।
ফ্যাশনে এসেছে বৈচিত্র্য। তবে বড়দের পছন্দের জায়গায় খুব বেশি যে বদল হয়েছে, তা বলা যাবে না। কিন্তু তরুণদের পছন্দে বদল এসেছে ব্যাপক। এখন সাধারণত শীতপোশাক হিসেবে তরুণ প্রজন্মের পছন্দের শীর্ষে সোয়েটার, জ্যাকেট, কোট কিংবা ব্লেজার ও হুডি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বর্তমান সময়ে তরুণ প্রজন্মের শীত নিবারণে জনপ্রিয় পোশাক কোনটি—হুডি, না জ্যাকেট?
শীতের স্মার্ট পোশাক হিসেবে হুডি বেশ জনপ্রিয়। পাশাপাশি হুডি টি-শার্টও এখন তরুণদের পছন্দের শীর্ষে। ইউনিসেক্স এসব পোশাক পরছে নারী-পুরুষ সবাই। বাড়তি কানটুপি সঙ্গে নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর ঝামেলা নেই আবার দেখতেও স্টাইলিশ। চুল রাখা যায় ধুলামুক্ত। এসব কারণে হুডির প্রতি তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ একটু বেশি।
কিছুদিন আগেও শুধু জ্যাকেটে হুডি ব্যবহার করা হতো। জিপার ছাড়া বড় পকেট থাকত তাতে। কোনো জিনিস বহন করা কিংবা মাথা ঢাকার প্রয়োজনে কাজে লাগত তা। কিন্তু বর্তমানে হুডিতে এসেছে নতুনত্ব। শুধু জ্যাকেট নয়, সোয়েটার, টি-শার্টসহ বিভিন্ন পোশাকে হুড জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। মেয়েদের জন্য তৈরি হচ্ছে নানা কাটের টপ। সঙ্গে থাকছে হুডি। ছেলেদের ফুলস্লিভ হুডি টি-শার্ট, হুডি শার্ট, হুডি জ্যাকেট, হুডি সোয়েটার, ব্রকলাইন হুডি সোয়েটার, স্লিভলেস হুডি, ব্যাটম্যান হুডির পাশাপাশি হুডি শার্টগুলোও মূলত কটন আর ডেনিমে তৈরি। ফলে হালকা শীতে সেগুলোই চালানো যায়, ভারী পোশাকের বদলে।
অন্যদিকে মেয়েদের সুতি কিংবা জর্জেট কাপড়ের পোশাকের সঙ্গেও হয়েছে হুডির সংযোজন। এসেছে নানা রঙের স্ট্রাইপ দেওয়া হুডি টপ। খাটো হাতার এসব টপের সঙ্গে বিপরীত রঙের টি-শার্ট পরা যেতে পারে। এসব রঙের মধ্যে ছাই, কালো, গাঢ় নীল আর মেরুনের প্রাধান্য দেখা যাচ্ছে। চামড়ার তৈরি হুডসহ জ্যাকেটও এসেছে বাজারে।
কিন্তু তাই বলে জ্যাকেট কি কম জনপ্রিয়? তরুণদের শীতপোশাকে প্রতিবারই বাজারে চাহিদার একটি বড় অংশজুড়ে থাকে জ্যাকেট। এটি যেমন শীত পাহারা দেয়, অন্যদিকে ফ্যাশনের দিক থেকেও কম যায় না। তরুণদের কাছে শীতের জ্যাকেটের মধ্যে জনপ্রিয় হলো লেদারের জ্যাকেট। বাইকারদের দারুণ পছন্দের এটি। লেদার জ্যাকেটের সামনের জিপার টেনে দিলেই ঠান্ডা থেকে মোটামুটি মুক্ত।এখন বাজারে লেদারের যেসব জ্যাকেট পাওয়া যায়, সেগুলোর বেশির ভাগই পিউ লেদার। তা ছাড়া পেডিং জ্যাকেট, উইন্ডব্রেকার, গ্যাবার্ডিনের জ্যাকেট, ডেনিম জ্যাকেট, বোম্বার জ্যাকেট, কর্ড কিংবা কাপড়ের জ্যাকেটের জনপ্রিয়তাও কম নয়।
আর কোট কিংবা ব্লেজারের প্রশ্নে বলতে হয়, এটি আসলে ফরমাল পোশাক। যতই আমরা একে ক্যাজুয়াল করতে চাই না কেন, এটি ফরমাল লুক আনবেই। ফরমাল পোশাক বলেই অফিস কিংবা মিটিংয়ে এর প্রচলন বেশি।
এখন চলছে বিয়ের মৌসুম। বিয়েবাড়িতে বেশির ভাগ মানুষ যাবেন সেজেগুজে। তাই সেখানে ব্লেজারেই মুক্তি। শুধু বিয়ের সময়ের সঙ্গে ব্লেজারের রংটা মিলিয়ে নিলেই হলো। তাতে ফরমাল লুকের সঙ্গে আসবে আভিজাত্যও থাকবে।
হুডি কিংবা জ্যাকেট অথবা ব্লেজার—কোনোটির জনপ্রিয়তা কম নয়। প্রত্যেকের ফ্যাশন স্টেটমেন্ট এবং রুচির ওপর পোশাকের পছন্দ গড়ে ওঠে। এ পছন্দেই আসে বৈচিত্র্য। সঙ্গে যোগ হয় বয়স আর নান্দনিকতার বোধ। সব মিলিয়ে এই শীতে বেছে নিতে পারেন পছন্দের হুডি, জ্যাকেট কিংবা ব্লেজার।