লাইফস্টাইল লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
লাইফস্টাইল লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী, ২০২৫

শীতের এই সময় অনেকেই শুষ্ক কাশিতে ভুগছেন।

শীতের এই সময় অনেকেই শুষ্ক কাশিতে ভুগছেন।

শীতের এই সময় অনেকেই শুষ্ক কাশিতে ভুগছেন। শুষ্ক কাশি বা ড্রাই কফ মানে কাশির সঙ্গে কোনো কফ বা মিউকাস আসছে না। বিভিন্ন কারণে শুষ্ক কাশি হতে পারে। কারও কারও সমস্যাটা আবার দীর্ঘমেয়াদি, অনেক দিন ধরেই লেগে থাকে। চেষ্টা করেও কোনো কিছুতেই কমে না। এমন ভুক্তভোগীরা ডাক্তারের কাছে গিয়ে বলেন—কী করব, কী করলে এই বিরক্তিকর অবস্থা থেকে মুক্তি পাব? জেনে নিন, কেন শুষ্ক কাশি হয় আর তা থেকে দূরে থাকার উপায়ই–বা কী ডা. আফলাতুন আকতার জাহান কারণ পরিবেশজনিত কারণ: ঢাকা শহরের বাতাস এখন দূষণের মাত্রা ছাড়িয়েছে। এই বাতাসে শ্বাস নেওয়া যেমন কষ্টের, তেমনি হাঁচি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের শুষ্ক কাশির সবচেয়ে বড় কারণ অতিরিক্ত ধুলাবালি, যানবাহন ও কলকারখানার ধোঁয়া আর পরিবেশদূষণ। শীতের শুষ্কতা: শীতে এই ঠান্ডা বাতাস ও শুষ্ক আবহাওয়া শুকনা কাশির একটা বড় কারণ। অ্যালার্জি: বিভিন্ন রকমের ডাস্ট, ফুলের রেণু, পোষা প্রাণীর পশম ও কিছু খাবার থেকে অ্যালার্জি হয় অনেকের। এই অ্যালার্জির কারণে শুষ্ক কাশি হয়। শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ: ভাইরাসজনিত ফ্লু বা সংক্রমণ, ব্রংকাইটিস, অ্যাজমা, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, টনসিলাইটিসে শুকনা কাশি হয়। এ ছাড়া যাঁরা আগে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন ও ফুসফুসে ফাইব্রোসিস হয়েছে, তাঁদের শুকনা কাশি হয় এবং তা সহজে কমতে চায় না। ধূমপান: দীর্ঘদিন ধরে যাঁরা ধূমপান করেন অথবা রাসায়নিক বা বিষাক্ত পদার্থের সংস্পর্শে কাজ করেন, তাঁদের শুকনা কাশি একটি সাধারণ সমস্যা। অ্যাসিড রিফ্লেক্স: গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লেক্স বা পাকস্থলীর অ্যাসিড খাদ্যনালিতে উঠে আসলে খাদ্যনালি ও গলায় জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি করে, যা শুষ্ক কাশি সৃষ্টি করে। কিছু ওষুধ: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের কিছু ওষুধ যেমন এসিই ইনহিবিটর জাতীয় ওষুধে শুকনা কাশি হয়। করণীয় কী • বাইরে যাওয়ার সময় মাস্ক ব্যবহার করুন। • নিজেকে হাইড্রেট রাখুন। বেশি করে পানি ও পানি–জাতীয় খাবার খেতে হবে। • গরম পানীয় যেমন আদা, পুদিনাপাতা, লবঙ্গ দিয়ে বানানো চা শুষ্ক কাশিতে আরামদায়ক। • অ্যালার্জিজাতীয় খাবার ও পরিবেশ এড়িয়ে চলুন। • শুকনা কাশি দীর্ঘদিন থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ডা. আফলাতুন আকতার জাহান, মেডিসিন স্পেশালিস্ট, ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগ, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, ঢাকা

শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৪

রুম হিটার ব্যবহারের আগে যেসব বিষয় জানা জরুরি

রুম হিটার ব্যবহারের আগে যেসব বিষয় জানা জরুরি

শীত শুরুতেই অনেকে ব্যবহার শুরু করেছেন রুম হিটার। এটি তাৎক্ষণিক ঘর গরম করলেও শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। হিটার ব্যবহারে হয়তো আপনি সাময়িকভাবে ঘর গরম করতে পারবেন। তবে নিয়মিত রুম হিটার ব্যবহারে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে কঠিন রোগ। তাই সতর্ক থেকে তবেই ব্যবহার করুন রুম হিটার। যেভাবে কাজ করে হিটার অধিকাংশ হিটারের ভেতরেই গরম ধাতুর পাত বা সিরামিক কোর থাকে। ঘরের তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য গরম হাওয়া বের করে এটি। হিটার থেকে নির্গত গরম বাতাস ঘরের আর্দ্রতা শুষে নেয়। এমনকি এই রুম হিটার আবহাওয়ায় উপস্থিত অক্সিজেনকে পুড়িয়ে দেয়। বুঝতেই পারছেন হিটার ব্যবহারের ফলে শরীরের কতটা ক্ষতি হতে পারে। হিটার থেকে যে গরম বাতাস বের হয়, তা ত্বককে অত্যন্ত রুক্ষ ও শুষ্ক করে দেয়। হিটারের কারণে অনিদ্রা, মাথাব্যথার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। কনভেনশান হিটার, হ্যালোজেন হিটার ও ব্লোয়ারের অত্যধিক ব্যবহার ব্যক্তিকে অসুস্থ করে তুলতে পারে। এসব হিটার থেকে যে রাসায়নিক নির্গত হয়, তা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরের ভিতরে প্রবেশ করে ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি করে। বিশেষ করে অ্যাজমা ও অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে হিটার ব্যবহার করবেন না। আর ভুলেও হিটারের পাশে বসবেন না। অ্যাজমার রোগীরা রুম হিটারের কারণে ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন। শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা থাকেলে হিটার থেকে দূরে থাকুন। এছাড়া ব্রঙ্কাইটিস ও সাইনাসের রোগীরাও এই যন্ত্রের কারণে সমস্যায় পড়তে পারেন। হিটারের বাতাস এসব রোগীর ফুসফুসে কফ জমাতে শুরু করে। এ কারণে হাঁচি-কাশি হতে পারে। আবার ফুসফুসে জমে থাকা কফ শুকিয়ে গেলে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যাজমার রোগী বা বিভিন্ন অ্যালার্জিতে যারা ভোগেন তারা সাধারণ হিটারের পরিবর্তে অয়েল হিটার ব্যবহার করতে পারেন। এই হিটারে তেল ভরতি পাইপ থাকে, যা হাওয়াকে শুষ্ক হতে দেয় না। আর সাধারণ হিটার ব্যবহার করলে, কিছুক্ষণ পর তা বন্ধ করে দিন। সাইনাস ও ব্রঙ্কাইটিসের সমস্যা থাকলে হিউমিডিফায়ারের ব্যবহার সবচেয়ে ভালো। এটি বায়ুতে আর্দ্রতা বজায় রাখে, ফলে শ্বাসকষ্ট হয় না। গ্যাস হিটার থেকে সাবধানে থাকুন। গবেষণা অনুযায়ী, যে বাড়িতে গ্যাস হিটার বা এলপিজি হিটার বেশি ব্যবহার করা হয়, সেসব পরিবারের শিশুদের মধ্যে অ্যাজমার সমস্যা অধিক দেখা যায়। এছাড়া কাশি, হাঁচি, বুকে ঘরঘর শব্দ ও ফুসফুসের ক্ষতির লক্ষণ বেশি দেখা যায় এসব পরিবারেই। এই হিটার থেকে কার্বন মনোঅক্সাইড নির্গত হয়। যা ছোট শিশু ও বয়স্কদের স্বাস্থ্যের ওপর কুপ্রভাব ফেলে। ভুলেও কখনো কম্বলের মধ্যে হিটার রাখবেন না। এতে আগুন পর্যন্ত লাগতে পারে। প্রতিদিন হিটার ব্যবহার করলে- কাশি, মাথাব্যথা, বমি বা গা গোলানো, চোখ শুকিয়ে যাওয়া, নাক বন্ধ হওয়া, শ্বাস-প্রশ্বাস সংক্রান্ত সমস্যার ঝুঁকি, অ্যাজমার রোগীদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। যদি হিটার ব্যবহার করতেই হয়, তাহলে কিছু সাবধানতা মেনে চলা ভালো। তো আর দেরি না করে জেনে নিন কী কী করবেন? > নির্দিষ্ট সময় পরপর চা, কফি বা স্যুপ পান করুন। এর ফলে গলার আর্দ্রতা বজায় থাকবে। > ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। > পর্যাপ্ত পরিমাণে হালকা গরম পানি পান করুন। > ঘরের কোনো অংশে পাত্র ভরতি পানি রাখুন। এর ফলে বাড়ির ভেতরের বায়ু আর্দ্র থাকবে। > হিটারের তাপমাত্রা নির্দিষ্ট রাখুন। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
শীতের সন্ধ্যায় হয়ে যাক ডিম মোমো

শীতের সন্ধ্যায় হয়ে যাক ডিম মোমো

হরেক পদের এবং স্বাদের মোমোর মধ্যে চিকেন মোমো সবারই পছন্দের। তবে এর একঘেয়েমি দূর করতে এবার খেতে পারেন ডিম মোমো। শীতের সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা ডিম মোমো একবার খেলে বারবার খেতে ইচ্ছে করবে আপনার। চাইলে আজ ঘরেই কম উপকরণে সুস্বাদু এই ডিম মোমো তৈরি করতে পারবেন। লাগবে মাত্র ৭ উপকরণ। তো আর দেরি নয়; দেখে নিন রেসিপিটি- উপকরণ ১. ডিম ৪টি ২. টমেটো ১টি একটি ৩. পেঁয়াজ ১টি ৪. রসুন এক কোয়া ৫. আদা ১ টেবিল চামচ ৬. কাঁচামরিচ ৫-৬টি ৭. ময়দা ৬ কাপ ও ৭. ধনেপাতা সামান্য। প্রণালী প্রথমে ডিম সেদ্ধ করে ছোট ছোট করে কেটে নিন। তারপর ম্যারিনেট করুন ১/৪ চা চামচ লবণ, ১ চা চামচ মরিচের গুঁড়া, আধা চা চামচ হলুদ গুঁড়া দিয়ে ১০-১৫ মিনিট। আদা আমরা বাটবো না, গ্রেড করবো আর রসুন ছোট ছোট টুকরো চাকা করে কাটবো, পেঁয়াজ ও একদম ছোট ছোট টুকরো স্কয়ার করে কেটে রাখুন। কাঁচামরিচ ও ছোট ছোট করে গোল গোল কেটে রাখবো। আর একদিকে ময়দা নরম করে মেখে রাখতে হবে। নরম করে মাখার জন্য গরম পানি দিয়ে ময়দা মাখতে পারেন। মোটামুটি ২০ মিনিটের মতো মাখতে হবে, তারপর একটা ভেজা কাপড় চাপা দিয়ে মসলা করতে যেতে হবে। প্যানে তেল নিয়ে ডিম আধা মিনিট হালকা করে ভেজে তুলে রাখুন। এরপর এক চিমটি চিনি দিয়ে তেল নেড়ে পেঁয়াজ ভাজবো, একটু বাদামি হয়ে এলে গ্রেড করা আদা দিয়ে একটু ভেজে কাটা টমেটো দিয়ে আধা চা চামচ করে হলুদ, মরিচের গুঁড়া দিয়ে নাড়তে থাকুন। গ্রেভি হয়ে এলে রসুন দিয়ে ঢেকে রান্না করুন। মসলা থেকে তেল ছাড়ার অপেক্ষা করুন। এরপর ভাজা ডিম, আর কাঁচা মরিচ কুচি ভালো করে মিশিয়ে ৩-৪ মিনিট রান্না করে স্বাদমতো লবণ দিন। যদি গ্রেভি থাকে একটু গ্রেভিটা শুকনো করে নিন। শেষে এক স্লাইস লেবুর রস মেশাতে হবে। ব্যাস মোমোর পুর রেডি। এবার ময়দার ডো থেকে ছোটো করে লুচির মতো লেচি কেটে নিন। লুচির মতোই বেলে নিন। খেয়াল রাখতে হবে যেন বেশি পাতলা না হয়, এতে পুর ভরার পরে ফেটে যেতে পারে। এরপর লুচি তৈরি করে পুর ভরে মুড়ে নিন চারদিক। এবার একটি বড় প্যানে পানি গরম করে উচ্চ তাপে ১০ মিনিট পানি ফুটিয়ে ভেতরে একটা স্ট্যান্ড বসিয়ে একটা ছিদ্রযুক্ত পাত্রতে মোমোগুলো রেখে ওভেন স্ট্যান্ডের ওপর বসিয়ে দিন। ওপরে এয়ার টাইট ঢাকনা দিতে হবে, চুলার আঁচ হালকা করে ২০-৩০ মিনিট রেখে দিলেই তৈরি হয়ে যাবে সুস্বাদু ডিম মোমো।

সোমবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪

শীতে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি পূরণ করবে যেসব খাবার

শীতে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি পূরণ করবে যেসব খাবার

ভিটামিন ডি-র অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল অন্ত্রে ক্যালসিয়াম শোষণের প্রচার করা। এবং কঙ্কালের ক্যালসিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখা। অস্টিওব্লাস্ট সংখ্যা বৃদ্ধি করে হাড়ের রিসোর্পশনকে উন্নীত করা, হাড় গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম এবং ফসফেট এর মাত্রা বজায় রাখে। হাড় ও দাঁতের স্বাভাবিক বিকাশেও ভিটামিন ডি-র গুরুত্ব অপরিসীম। ভিটামিন ডি-র উৎস হল সূর্যালোক। কিন্তু শীতকালে সূর্য খুব কম সময়ের জন্যেই থাকে। ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি শরীরে প্রবেশ করতে পারে না। তাতেই শরীরে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি তৈরি হয়। এই ভিটামিন ক্যানসারের মতো রোগ প্রতিরোধ করতে পারে। এ ছাড়াও, শরীরের পেশীকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। তবে কেবল সূর্যরশ্মি ভিটামিন ডি-র একমাত্র উৎস নয়। রোজের খাদ্যাভ্যাসে কিছু বদলে শরীরে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি মেটানো সম্ভব। দুগ্ধজাতীয় খাবার দুগ্ধজাত খাবারে ভরপুর পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে। তাই রোজ না হলেও সপ্তাহে অন্তত কয়েক দিন খেতে পারেন এই ধরনের খাবার। শরীরে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি তৈরি হলে, তা সহজেই পূরণ হবে। হাড় মজবুত করতে ও শরীর চনমনে রাখতে খেতে পারেন দুধ, দই, ছানার মতো কিছু খাবার। মাছ শীতের মৌসুমে শরীরে ভিটামিন ডি-র সরবরাহ যাতে ব্যাহত না হয়, সে কারণে বেশি করে খেতে পারেন সামুদ্রিক মাছ। তেলাপিয়া, টুনা, স্যালমন—এই ধরনের মাছ রোজের ডায়েটে রাখলে ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম ও ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডেরও ঘাটতি মেটে। হাড় এবং দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও এই মাছ খেতে পারেন। মিলবে উপকার। ডিমের কুসুম ডিমের কুসুম কিন্তু ভিটামিন ডি-এর খুব ভালো উৎস। শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব হলে গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা বাড়ে। শীতে এই সমস্যা আরও বেড়ে যায়। এই সমস্যা এড়াতে রোজের ডায়েটে ডিম রাখতে পারেন। কিশমিশ ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি এবং ফসফরাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু উপাদান রয়েছে কিশমিশে। যা হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ভীষণ জরুরি। রক্তাল্পতার সমস্যাতেও খাওয়া যায় কিশমিশ।
কেমন হবে টিনএজ সন্তানের সঙ্গে মা-বাবার আচরণ

কেমন হবে টিনএজ সন্তানের সঙ্গে মা-বাবার আচরণ


 বয়ঃসন্ধিকালকে অভিভাবকত্বের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং পর্যায় বলা হয়। একসময়ের আড্ডাবাজ এবং স্নেহপূর্ণ শিশুটি হঠাৎ দূরের, খিটখিটে মেজাজের বা বিদ্রোহী বলে মনে হতে পারে। এর ফলে বাবা-মা বিভ্রান্ত বোধ করে এবং কীভাবে সংযোগ করা যায় তা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে যায়। কিশোর-কিশোরীদের জন্য এটি একটি বিশাল পরিবর্তনের সময় কারণ তারা তাদের ক্রমবর্ধমান স্বাধীনতা, সময়বয়সীদের সঙ্গে প্রতিযোগীতার চাপ, এবং মানসিক উত্থান-পতনে নিজেও দিশেহারা বোধ করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক টিনএজ সন্তানের সঙ্গে মা-বাবার আচরণ কেমন হবে-

১. বেশি শুনুন, কম কথা বলুন

কথোপকথনের আগে, চলাকালীন এবং পরে কথা বলার চেয়ে অনেক বেশি শুনুন। কিশোর-কিশোরীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ক্রমাগত উপদেশ বা নির্দেশ পেতে থাকে। আপনার নিজের শব্দ নিরীক্ষা করে এবং অপ্রয়োজনীয় বক্তৃতা সীমিত করে, তার স্বায়ত্তশাসনের প্রতি আস্থা ও সম্মান প্রকাশ করেন। এই সূক্ষ্ম পরিবর্তন তাকে মন খুলে কথা বলতে সাহায্য করবে।

২. ভাষাকে আক্ষরিক অর্থে গ্রহণ করবেন না

কিশোর-কিশোরীরা প্রায়ই নাটকীয় বা আঘাতমূলক ভাষা ব্যবহার করে, কিন্তু এক্ষেত্রে বাবা-মায়ের অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া করা উচিত নয়। ‘আমি তোমাকে ঘৃণা করি’ বা ‘আমি তোমাকে মেরে ফেলবো’ এর মতো বাক্যাংশগুলো সাধারণত প্রকৃত উদ্দেশ্যের পরিবর্তে হতাশার প্রকাশ করে। এগুলো আসলে প্রতিরক্ষা বাহিনীর দ্বারা ছোড়া তীর। এটাকে সিরিয়াসলি নেবেন না। তার আবেগ স্থির হতে দিন এবং ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্ব এড়িয়ে যান।

৩. সমর্থন

কৈশোর হলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময়, শখ থেকে বন্ধুত্ব পর্যন্ত সবকিছুরই নীরিক্ষা চলে এসময়ে। যদিও তার পছন্দগুলো চঞ্চল বা অসঙ্গত বলে মনে হতে পারে, তবে এই অন্বেষণটি পরিচয় গঠনের জন্য অপরিহার্য। লজিস্টিক সীমা নির্ধারণ করার সময় পিতামাতাদের এই উদ্যোগগুলোকে সমর্থন করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। বিনা বিচারে উৎসাহ তাদের আত্মবিশ্বাস ও স্বাধীনতা বাড়ায়।

৪. স্বাধীনতা এবং বাউন্ডারি স্পষ্ট করুন

কিশোর-কিশোরীরা স্বাধীনতা চায় কিন্তু নিয়ন্ত্রণেরও প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখা উচিত। টিনএজ সন্তানকে তার পোশাক বাছাই করতে দিন। তবে বয়সের আগেই ড্রাইভিং বা কোনোকিছুর অপব্যবহার করতে দেবেন না। এই পদ্ধতিটি পারস্পরিক শ্রদ্ধা গড়ে তোলে এবং তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

হুডি, জ্যাকেট নাকি ব্লেজার

হুডি, জ্যাকেট নাকি ব্লেজার


 একটা সময় ছিল, যখন শীত মানেই বড়রা পরতেন চাদর কিংবা সোয়েটার; আর তরুণেরা পরতেন জ্যাকেট। নারীরা পরতেন শাল আর কার্ডিগান। এটা ছিল শীতফ্যাশনের সাধারণ প্যাটার্ন। কোট, স্যুট যে পরা হতো না, তা নয়। কিন্তু সেসব ছিল সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। জ্যাকেটের ছিল নানা কেতা। বেশির ভাগ ছিল কাপড়ের দুই স্তরের মধ্যে ফোম দিয়ে তৈরি। ফুলহাতা সেসব জ্যাকেটের কোনো কোনোটা চেইন খুলে বানিয়ে ফেলা যেত হাফহাতা। আর সেগুলোর রং ছিল সাধারণত কালো।

ফ্যাশনে এসেছে বৈচিত্র্য। তবে বড়দের পছন্দের জায়গায় খুব বেশি যে বদল হয়েছে, তা বলা যাবে না। কিন্তু তরুণদের পছন্দে বদল এসেছে ব্যাপক। এখন সাধারণত শীতপোশাক হিসেবে তরুণ প্রজন্মের পছন্দের শীর্ষে সোয়েটার, জ্যাকেট, কোট কিংবা ব্লেজার ও হুডি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বর্তমান সময়ে তরুণ প্রজন্মের শীত নিবারণে জনপ্রিয় পোশাক কোনটি—হুডি, না জ্যাকেট?

শীতের স্মার্ট পোশাক হিসেবে হুডি বেশ জনপ্রিয়। পাশাপাশি হুডি টি-শার্টও এখন তরুণদের পছন্দের শীর্ষে। ইউনিসেক্স এসব পোশাক পরছে নারী-পুরুষ সবাই। বাড়তি কানটুপি সঙ্গে নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর ঝামেলা নেই আবার দেখতেও স্টাইলিশ। চুল রাখা যায় ধুলামুক্ত। এসব কারণে হুডির প্রতি তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ একটু বেশি।

কিছুদিন আগেও শুধু জ্যাকেটে হুডি ব্যবহার করা হতো। জিপার ছাড়া বড় পকেট থাকত তাতে। কোনো জিনিস বহন করা কিংবা মাথা ঢাকার প্রয়োজনে কাজে লাগত তা। কিন্তু বর্তমানে হুডিতে এসেছে নতুনত্ব। শুধু জ্যাকেট নয়, সোয়েটার, টি-শার্টসহ বিভিন্ন পোশাকে হুড জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। মেয়েদের জন্য তৈরি হচ্ছে নানা কাটের টপ। সঙ্গে থাকছে হুডি। ছেলেদের ফুলস্লিভ হুডি টি-শার্ট, হুডি শার্ট, হুডি জ্যাকেট, হুডি সোয়েটার, ব্রকলাইন হুডি সোয়েটার, স্লিভলেস হুডি, ব্যাটম্যান হুডির পাশাপাশি হুডি শার্টগুলোও মূলত কটন আর ডেনিমে তৈরি। ফলে হালকা শীতে সেগুলোই চালানো যায়, ভারী পোশাকের বদলে।


অন্যদিকে মেয়েদের সুতি কিংবা জর্জেট কাপড়ের পোশাকের সঙ্গেও হয়েছে হুডির সংযোজন। এসেছে নানা রঙের স্ট্রাইপ দেওয়া হুডি টপ। খাটো হাতার এসব টপের সঙ্গে বিপরীত রঙের টি-শার্ট পরা যেতে পারে। এসব রঙের মধ্যে ছাই, কালো, গাঢ় নীল আর মেরুনের প্রাধান্য দেখা যাচ্ছে। চামড়ার তৈরি হুডসহ জ্যাকেটও এসেছে বাজারে।

কিন্তু তাই বলে জ্যাকেট কি কম জনপ্রিয়? তরুণদের শীতপোশাকে প্রতিবারই বাজারে চাহিদার একটি বড় অংশজুড়ে থাকে জ্যাকেট। এটি যেমন শীত পাহারা দেয়, অন্যদিকে ফ্যাশনের দিক থেকেও কম যায় না। তরুণদের কাছে শীতের জ্যাকেটের মধ্যে জনপ্রিয় হলো লেদারের জ্যাকেট। বাইকারদের দারুণ পছন্দের এটি। লেদার জ্যাকেটের সামনের জিপার টেনে দিলেই ঠান্ডা থেকে মোটামুটি মুক্ত।এখন বাজারে লেদারের যেসব জ্যাকেট পাওয়া যায়, সেগুলোর বেশির ভাগই পিউ লেদার। তা ছাড়া পেডিং জ্যাকেট, উইন্ডব্রেকার, গ্যাবার্ডিনের জ্যাকেট, ডেনিম জ্যাকেট, বোম্বার জ্যাকেট, কর্ড কিংবা কাপড়ের জ্যাকেটের জনপ্রিয়তাও কম নয়।

আর কোট কিংবা ব্লেজারের প্রশ্নে বলতে হয়, এটি আসলে ফরমাল পোশাক। যতই আমরা একে ক্যাজুয়াল করতে চাই না কেন, এটি ফরমাল লুক আনবেই। ফরমাল পোশাক বলেই অফিস কিংবা মিটিংয়ে এর প্রচলন বেশি।

এখন চলছে বিয়ের মৌসুম। বিয়েবাড়িতে বেশির ভাগ মানুষ যাবেন সেজেগুজে। তাই সেখানে ব্লেজারেই মুক্তি। শুধু বিয়ের সময়ের সঙ্গে ব্লেজারের রংটা মিলিয়ে নিলেই হলো। তাতে ফরমাল লুকের সঙ্গে আসবে আভিজাত্যও থাকবে।

হুডি কিংবা জ্যাকেট অথবা ব্লেজার—কোনোটির জনপ্রিয়তা কম নয়। প্রত্যেকের ফ্যাশন স্টেটমেন্ট এবং রুচির ওপর পোশাকের পছন্দ গড়ে ওঠে। এ পছন্দেই আসে বৈচিত্র্য। সঙ্গে যোগ হয় বয়স আর নান্দনিকতার বোধ। সব মিলিয়ে এই শীতে বেছে নিতে পারেন পছন্দের হুডি, জ্যাকেট কিংবা ব্লেজার।