সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫

৪২ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী পেলেন আগাম জামিন

৪২ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী পেলেন আগাম জামিন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার অভিযোগে করা বিস্ফোরক আইনের চারটি মামলার ৪২ জন আসামিকে হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন দেওয়া হয়েছে। আসামিরা সবাই আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। রবিবার (১৬ মার্চ) ৩৬ জন এবং সোমবার (১৭ মার্চ) আরও ৬ জন জামিন পেয়েছেন। হাইকোর্টের বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান এবং মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ ৬ সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করে আসামিদের সিলেটের দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন। জামিনপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন জকিগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবুল খায়ের চৌধুরী, জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফতাব আহমদ, জকিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এ জি বাবর, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম, উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি সজল বর্মণ এবং উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আল আমিন আব্দুল্লাহ সুমন। সোমবার জামিনপ্রাপ্তরা হলেন মানিকপুর গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে সুলতান আহমদ, কলাদাপানিয়া গ্রামের সুধীর কুমার সিংহের ছেলে সজল কুমার সিংহ, হাতধর গ্রামের মো. আব্দুর রহিমের ছেলে ইকবাল আহমদ, দরগা বাহারপুর গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে এটিএম ফয়সল এবং পীরের চক গ্রামের নোমান আলীর ছেলে শিমুল আহমদ। জামিন শুনানিতে আসামিদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শারমিন রুবায়ত ইসলাম। জকিগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবুল খায়ের চৌধুরী বলেন, “আদালত আজ আরও ৬ জনকে আগাম জামিন দিয়েছেন। এর আগে গতকাল (রবিবার) আরও ৩৬ জনকে আগাম জামিন দেওয়া হয়েছিল।” জামিনপ্রাপ্তদের ৬ সপ্তাহের মধ্যে সিলেটের দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
মৃত শাবক জবাইকৃত মাংস ফেলে পালিয়ে যায়   দূর্বত্তরা

মৃত শাবক জবাইকৃত মাংস ফেলে পালিয়ে যায় দূর্বত্তরা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ঘোড়ার মাংসকে গরু মাংস বলে বিক্রির উদ্দেশ্যে ভূট্টা ক্ষেতে পাশে গর্ভবতী ঘোড়া জবাই করেছেন দূর্বত্তরা। একেই বলে মনুষ্যত্ব ভুলন্ঠিত,রাতের আধারে একটি দূর্বৃত্তের দল ভুট্টাখেতে ঘোড়া জবাই করে কাটাকাটি শুরু করে এর মধ্যেই গ্রামবাসীরা টের পেয়ে যায়। গ্রামের লোকজন জড়ো হতে থাকলে তারা একটি মোটরসাইকেল, জীবিত ঘোড়া, মৃত শাবক জবাইকৃত মাংস ফেলে পালিয়ে যায়। নাম না প্রকাশ শর্তে গ্রামের লোকজন পরে বটতলী মোড়ে এনে জনসম্মুখে প্রকাশ করে। তদন্তে মূলহোতা যিনি ঘৃন্য কাজের সাথে জড়িত ও অন্যান্য ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি করছেন। এমনটাই ঘটেছে ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার ৫ নং সদর ইউনিয়নে( দেহট্র হাটপুকুর) বটতলী মোড় এলাকায়। এই বিষয়ে হরিপুর উপজেলা থানা পুলিশকে জানানো হলে, কর্তব্যরত ডিউটি অফিসার জানান, এস আই মো,মোশাররফ হোসেনকে সরেজমিনে পাঠানো হয়েছিল,তিনি তদন্ত করে এসেছে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঠাকুরগাঁওয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সুবিধাভোগী পরিবারের মাঝে টিসিবি বিতরণ !

ঠাকুরগাঁওয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সুবিধাভোগী পরিবারের মাঝে টিসিবি বিতরণ !

মোঃ মজিবর রহমান শেখ ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি,, আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নে ১১০২ জন টিসিবি সুবিধাভোগী পরিবারের মাঝে টিসিবি পণ্য বিতরণ করা হয়েছে। গত ১৬ মার্চ রবিবার সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত টিসিবি কার্ডধারি ১১০২ জন সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের মাঝে এই টিসিবি পণ্য বিতরণ করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়,স্মার্ট কার্ড না পাওয়ায় টিসিবি পণ্য থেকে বঞ্চিত হয়েছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের ৯ টি ওয়ার্ডের ৫ শত ২৮ টি পরিবার। দেড় মাস পার হলেও স্মার্ট কার্ড না পাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন পুরোনো এই কার্ডধারীরা। তারা রমজান মাসেও পাচ্ছেন না স্বল্পমূল্যের টিসিবি পণ্য। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী টিসিবি কার্ডধারীরা। এদিকে সরকারের ওপর দায় চাপাচ্ছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সচিব। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে এদের কার্ডগুলো নবায়ন করে স্মার্ট কার্ডে পরিবর্তিত করতে জমা নেওয়া হয়। গত ১৩ জানুয়ারি ছিল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময়। এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ৯টি ওয়ার্ডে মোট ১১০২টি স্মার্ট কার্ড বিতরণ করে চিলারং ইউনিয়ন। জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস অব্দি এখন পর্যন্ত ২ বার তাদের মাঝে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হয়। কিন্তু বাকি থাকা ৫ শত ২৮ টি অসহায় পরিবার বঞ্চিত হয়। দীর্ঘ দেড় মাস পার হয়ে গেলেও যাচাই-বাছাই শেষ না হওয়ায় স্মার্ট কার্ড হাতে পাননি সুবিধাভোগী পরিবারগুলো। টিসিবি ডিলার জানান, রমজান মাস উপলক্ষে ১ কেজি চিনি, ২ কেজি ডাল, ২ লিটার সয়াবিন তেল, ২ কেজি ছোলা ও ৫ কেজি চালের প্যাকেজ ৬শত টাকায় বিক্রি করা হয়। গত ১৬ মার্চ রবিবার ৭ নং-- চিলারং ইউনিয়ন পরিষদে বিক্রি হয় স্বল্পমূল্যের এসব টিসিবি পণ্য। ৬০০ টাকা হাতে নিয়ে টিসিবি পণ্যে নিতে ছুটে আসেন জাহানারা বেগম(৫২),মাজেদা নেগম(৫৬),মেহেরুন বেগম(৬০),সুফিয়া বেগম ৫৫,আবু তালেব(৪০), আব্দুর রহিমসহ (৩৫) অনেকেই। কিন্তু লাইনে দাড়ালেও স্মার্ট কার্ড না থাকায় তাদেরকে দেওয়া হয়নি স্বল্পমূল্যের পণ্য। পরে দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে বাড়ি ফিরে যাওয়ার সময় তারা বলেন, পুরোনো টিসিবির কার্ড নিয়ে স্বল্পমূল্যের পণ্য কিনতে এসেছিলাম। শুনছিলাম পুরোনো কার্ডেই দেবে। কিন্ত দেখি স্মার্ট কার্ড ছাড়া কারো কাছে টিসিবির মালামাল বেঁচে না। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ‘হামাক স্মার্ট কার্ড না দেওয়ায় ‘২ মাস যাবৎ টিসিবির মালামাল কিনতে পারি না। রমজান মাসেও কিনতে পারলাম না। বাজার থেকে চড়া দামে চিনি, তেল, ডাল, ছোলা, চাল কেনা আমাদের মতো গরীব মানুষের জন্য কষ্টসাধ্য ব্যাপার। অনেকক্ষণ দাড়াইছিলাম তারপরও দিল না। জাহানারা বেগম নামে এক বৃদ্ধ মহিল বলেন,”হামা গরিবলা ভাত খাবারে চাওল পায়না আর যেইলা লোক পাছে উমা পাশত লাগাই বিক্রি করে দেছে নাহইলে গরু ছাগলক খিলাই ফিলাছে”। ৭ নং-- চিলারং ইউনিয়নের টিসিবির ডিলার মেসার্স নেছার আহমেদ এন্ড ব্রাদার্স স্বত্তাধিকারী নূর মোহাম্মদ বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও সুষ্ঠ ও সুন্দর পরিবেশে সরকারের নিয়ম মাফিক সংশ্লিষ্ট পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য ও অন্যদের সার্বিক সহযোগিতায় পণ্যগুলো বিতরণ করছি। মোবাইল অ্যাপসে ডিজিটাল স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে পণ্য বিতরণ করার কারণে একজনের পণ্য অন্যকে প্রদান করার কোন সুযোগ নেই। টিসিবি বিতরণের সকল তথ্য সঙ্গে সঙ্গে সার্ভারে সংরক্ষিত হওয়ার কারণে উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা চাইলেই সকল তথ্য পর্যবেক্ষণ করতে পারছেন। তাই টিসিবি বিতরণে কোন অনিয়ম করার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শোভা আলী বলেন,প্রতিবার ১৬৩০ জনকে টিসিবি পণ্য দিয়ে আসলেও এবার কেবল ১১০২ জন স্মার্ট টিসিবি কার্ডধারী এই সুবিধা পাবেন। বাকিরা অভিযোগ করবে এটাই স্বাভাবিক। তবে স্মার্ট টিসিবি কার্ড ধারী যাদের ভেরিফিকেশন হচ্ছিল না তাদের প্রত্যেককে ভেরিফিকেশন করে টিসিবি পণ্য দেয়া হয়েছে। যেহেতু মোবাইল অ্যাপসে প্রতি গ্রাহকের তথ্য পূরণ করে টিসিবি পণ্য দিতে হচ্ছে, সেহেতু একটু সময় লাগতে পারে।আর যাদের কার্ড অনলাইন হয়ে আসেনাই পর্যায়ক্রমে আসবে বলে জানান তিনি। কোন হট্টগোল না করে ধৈর্য্য সহকারে ইউনিয়নের সুবিধাভোগীদের শান্তিপূর্ণভাবে টিসিবি পণ্য গ্রহণ করে সরকারের ভালো উদ্যোগকে শতভাগ সফল করার প্রতি আহবান জানান। রমজান মাসের শুরুতেই সুবিধাভোগীরা টিসিবি পণ্য পেলেন না তবে সামনে পুরোনো কার্ডে দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্মার্ট কার্ড ছাড়া দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে বিষয়টি ডিসি স্যারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছি। পরবর্তী সময়ে যদি কার্ড না হয় সেই ক্ষেত্রে হয়তো ন্যাশনাল আইডি কার্ডের মাধ্যমে টিসিবি পণ্য বিক্রি করা হতে পারে। এ বিষয়ে জেলা টিসিবি অফিস থেকে ভালো বলতে পারবে। এই বিষয়ে চিলারং ইউনিয়নের সচিব শামসুজ্জামান বলেন,ইউনিয়নে ১১০২ জনকে টিসিবি কার্ডধারি পরবারকে টিসিবি পণ্য দেওয়া হচ্ছে।যারা কার্ড পায়নি তারা কার্ড পাবে কিনা এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করতেছে সরকারের উপর।যেহেতু ডিজিটাল স্মার্ট কার্ডের মাধমে টিসিবি বিতরণ করা হচ্ছে, সেহেতু কোন প্রকারের অনিয়ম করার সুযোগ নেই।
ঠাকুরগাঁওয়ে ঘুষ লেনদেনের সময় টাকা সহ হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ও অডিটর আটক ।

ঠাকুরগাঁওয়ে ঘুষ লেনদেনের সময় টাকা সহ হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ও অডিটর আটক ।

মোঃ মজিবর রহমান শেখ ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি,, ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. শেরিকুজ্জামান ও অডিটর মো. হান্নানকে ঘুষের টাকাসহ হাতেনাতে আটক করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (১৭ মার্চ) হরিপুর উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতির নিকট ঘুষ লেনদেনের বিষয়ে লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঠাকুরগাঁও জেলা দুর্নীতি কমিশনের একটি দল তাদের আটক করে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অবসরপ্রাপ্ত অফিস সহায়ক জোহরা খাতুনের অবসর ভাতা প্রক্রিয়াকরণের জন্য শেরিকুজ্জামান ও হান্নান ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। দর-কষাকষির পর ২২ হাজার টাকায় রফা হয়। ১৭ হাজার টাকা আগেই দেওয়া হয়েছিল। বাকি ৫ হাজার টাকা দিতে গেলে দুদকের দল তাদের হাতেনাতে আটক করে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শেরিকুজ্জামান ও হান্নান যোগদানের পর থেকে ঘুষ লেনদেনে বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন। অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কাছ থেকে তারা ২ থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিতেন। এ ছাড়া যেকোনো কাজের জন্য সর্বনিম্ন ২০ হাজার টাকা ঘুষ নিতেন । অভিযোগ রয়েছে, শেরিকুজ্জামান নিজেকে ‘মহাশক্তিধর’ মনে করতেন এবং প্রায়ই ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় সংসদ সদস্যের ভাগ্নে পরিচয় দিতেন। তবে সরকার পতনের পর তিনি নিজেকে বিএনপির নেতা হিসেবে দাবি করেন। এর আগে শেরিকুজ্জামান ও আরেক অডিটর মজিবর রহমানের ঘুষ লেনদেনের বিরুদ্ধে স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছিলেন। জোহরা খাতুনের ছেলে মো. জহিরুল ইসলাম রংপুর বিভাগীয় হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কাছে ঘুষের বিষয়ে লিখিত অভিযোগও করেছিলেন। অভিযোগের তদন্ত হলেও শেরিকুজ্জামান বহাল তবিয়তে ছিলেন এবং মজিবর রহমানকে বদলি করা হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয় মো. আজমির শরিফ মারজী, সহকারী পরিচালক ও উপ-পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) বলেন, ‘আমরা বেশ কিছুদিন ধরেই এই অফিসের ওপর নজর রাখছিলাম। দীর্ঘ তদন্তের পর নিশ্চিত হয়েই অভিযান পরিচালনা করা হয়। আটককৃত ২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।